জবির নতুন ভবনে ফাটল জানেন না কর্তৃপক্ষ


প্রায় চারমাস আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নিচতলায় উত্তর ও পুর্ব দিকের এক পাশের মেডিকেল সেন্টারের দুই কক্ষে মেঝেতে এক ফিট উপরে এক ইঞ্চি পরিমান ফাটল ধরেছে। অথচ ওই স্থানটির নাকের ডগায় নিজের অফিস হলেও সরকারী একশ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক নাসির উদ্দিন আহমদ চৌধুরী এই বিষয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের কাছে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।

সরকারী একশ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন, আমি ফাটল সম্পর্কে এইমাত্র আপনাদের কাছে শুনলাম। এর আগে আমি এই সম্পর্কে কিছুই জানি না। তবে এগুলো দেখভালের দায়িত্ব আমার নয় তা প্রকৌশলী বিভাগের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য এ সপ্তাহের মধ্যে বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ার এক্সপার্ট আসার কথা রয়েছে বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

নতুন ভবনের উর্ধ্বমূখী করণ প্রকল্পের পরিচালক চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন হচ্ছে না। এই প্রকল্পের জন্য স্থায়ী ভিত্তিক পরিচালক দরকার রয়েছে বলে জানান একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক আগে ওয়াসার উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই পরিচালক সেখানকার পরিচালক বলে তেলবাজী করে জবির তৎকালীন উপাচার্যের মাধ্যমে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক হয়ে আসেন। প্রকল্প পরিচালকের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা না থাকায় নতুন বিল্ডিং সর্ম্পকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বলে জানান একাধিক সিনিয়র শিক্ষক। এ বছর আগস্টে তার সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই এক্সটেনশনের জন্য বিভিন্ন মহলে তদবীর শুরু করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনে যে ফাটল ধরেছে সে সম্পর্কে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী বিভাগ এবং পরিকল্পণা ও উন্নয়ন বিভাগ। রানা প্লাজার পরে ভবন ধসের বিষয়টি এখন সর্বত্র বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে নতুন ভবনে এরূপ ফাটল ধরায় কিভাবে উর্ধ্বমূখী ভবন  করা সম্ভব বলে প্রশ্ন করেন একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে পরিকল্পণা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ড. নাসির আহমদ চৌধুরী আরো বলেন, আমার কাজ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প সংক্রান্ত দলিলপত্র তৈরি ও দেখভাল করা। আর বিল্ডিং দেখভালের দায়িত্ব সম্পূর্ণ প্রকৌশল বিভাগের। এছাড়াও ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে। এ সম্পর্কে নির্বাহী প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা বলেন, এই ভবনের উর্ধ্বমূখীকরণের কাজ আমার নয়। এটার দায়িত্বে আছেন প্রকল্প পরিচালক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অন্যান্য ভবনের দেখভাল করা আমার দায়িত্বে। তবুও নতুন ভবনের ফাটল সম্পর্কে আমি উপাচার্যকে জানিয়েছিলাম। তিনি এর পরিপ্রেক্ষিতে এক্সপার্ট আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভবন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য এক্সপার্ট টিমের প্রধান ড. মমতাজ নূরকে আনার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
The Daily ALOKITO Bangladesh
 

No comments:

Post a Comment