জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক
এখনও বেদখলে রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রস্তাবিত ছাত্রীনিবাস এর জমি। জায়গাটি রিকশার গ্যারেজ নামে পরিচিত। সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় একশত রিকশা রাখা হয় সেখানে। বিশ্বববিদ্যালয়ের অনকূলে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত প্রদানের বিষয়টি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হলেও দখলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে বর্তমান অর্থবছরেই ভবন তৈরির কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন।
উপাচার্য অধ্যপক ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ এর নের্তৃত্বে বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গত বছর ১০ অক্টোবর, ২০১২, তারিখে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব স্বাক্ষরিত প্রেরিত অনুলিপি অনুসারে ৩/১ জনসন রোডস্থ (১নং খাস খতিয়ানের, সি, এস-৮৮, এস,এ-৬৮১, আর,এস-১০৩১ এবং মহানগর ৩৩০ নং দাগের ০.৩৪২২ একক) ‘খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত’ নীতিমালার ৩.০ (গ) অনুচ্ছেদ অনুসারে জগন্নাথ বিশ্বববিদ্যালয়ের অনকূলে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত প্রদানের বিষয়টি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। কিছুদিন জায়গাটি জনসাধারনের জন্য নিষিদ্ধ করে গেট বন্ধ করে দেওয়া হলেও আবার রিকশার গ্যারেজে পরিনত হয়েছে প্রস্তাবিত ছাত্রীনিবাসের জায়গাটি। শিক্ষার্থীদের দাবী প্রসাশনের অবহেলার কারণে বেদখল রয়ে আছে হলের জমি। জায়গাটি যাতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান দখল করতে না পারে এজন্য ঐ বছরের গোড়ার দিকে জবির শিক্ষার্থীরা জায়গাটিতে ছাত্রী হলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার প্রকৌশলী মো: ওহিদুজ্জামান বলেন, আমরা বরাদ্দ টাকা জমা দিয়েছি। এই মাসেই ঐ জায়গায় প্রহরী নিযুক্ত করার কথা থাকলেও সম্ভব হয়নি। আশা করছি আগামী মাসের মধ্যে আমরা জমি দখলে নিয়ে নিব। তিনি আরও বলেন, ছাত্রীনিবাস তৈরি কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেনীর কমচারীরা সেখানে অস্থায়ীভাবে থাকবে। বর্তমান অর্থবছরে ছাত্রীনিবাস ভবন তৈরির কাজ শুরু করা হতে পারে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারার, মো: সেলিম ভূঁইয়া বলেন, প্রস্তাবিত ছাত্রীনিবাসের জমির দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্তে সরকারের পক্ষ থেকে ১৫কোটি টাকা ব্যায় নির্ধারণ করা হয়। নিতীমালা অনুযায়ী দশ পার্সেন্ট, দেড় কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। একটি পক্ষ ঐ জমির পক্ষে রিট আবেদন করেছিল। তবে আমরা নিশ্চিত অতি শিগ্রহী আমরা জমির দখল পেয়ে যাব। তিনিও বর্তমান অর্থবছরে ছাত্রীনিবাস ভবন তৈরির কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঐ জমির মালিকানা দাবী করে আসছেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী দুই বন্ধু হাজী মো: শাহীবুল্লাহ ভূঁইয়া এবং হাজী মো: নাজিমুদ্দিন। শাহীবুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ১৯৯২ সালে আমরা উক্ত জমি সুনীল কুমার বসাক নামের ভদ্রলোকের কাছ থেকে কিনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকুলে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হলেও বর্তমান মালিক আমরা। ২০১২ জুন, ০৪ তারিখে সুনীল বসাক জমিটির মালিকানা দাবী করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন (রিট পিটিশন নং. ১৩৬২ অব ২০১২)। রিটের বিবাদী (১)বাংলাদেশ ভুমি মন্ত্রলায়, (২) ঢাকা জেলা প্রশাসক, এবং (৩) খালিদ হামিদুল হক চৌধুরী।
ঢাকা জেলা প্রশাসক, শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, সঠিক আইনানুগ প্রক্রিয়ায় প্রকৃত মালিক জমির দখল পাবে। এটা সম্পূর্ণ আইনগত বিষয়।
হল উদ্ধারে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলাকে দায়ী করে আসছে বলে জানা যায়। নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান গণি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই ছাত্রীনিবাস ভবন তৈরির কাজ স্থগিত হয়ে আছে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মনজুর মোর্শেদ বলেন, বিভিন্ন হল আন্দোলনের সময়ে প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও আমরা কিছুই পাইনি।
No comments:
Post a Comment