প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে প্রতিবাদলিপি

অদ্য ১৬ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় “উপাচার্যের গাড়ি বিলাস, অর্থকান্ড” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়ে এক প্রতিবাদলিপি তৈরি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, প্রথম আলো পত্রিকায় উক্ত প্রতিবেদনে জনৈক প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রমের উপর উপাচার্য মহোদয়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার নামে এধরনের একটি গুরুত্বহীন, অসত্য ও নেতিবাচক সংবাদ পত্রিকার প্রথম পাতায় ফলাও করে প্রকাশ করে হলুদ সাংবাদিকতার বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম, আর্থিক বিষয় ও উপাচার্য মহোদয়ের গাড়ি ব্যবহার সম্পর্কে যে-সকল অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এধরনের সংবাদ প্রকাশ একটি কুচক্রী মহলের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টা মাত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৫১ কোটি টাকার তহবিল ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রকাশিত খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে উল্লেখিত টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটি ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে এফডিআর করা হয়েছে।

এছাড়া প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, বর্তমান উপাচার্য মহোদয় ২০০৯ সালের ফেব্র“য়ারীতে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদানের পর সাবেক উপাচার্য মহোদয়ের গাড়িটি (প্রাইভেটকার) ব্যবহার করে আসছিলেন। কিন্তু গাড়িটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে প্রায়ই অকেজো থাকার কারণে উপাচার্য মহোদয়ের যাতায়াত সমস্যার কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটি ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি পাজেরো জীপ ক্রয় করা হয়েছে। পরবর্তীতে ট্রেজারার মহোদয়ের যোগদানের পর শিক্ষকদের পরিবহন সমস্যার কারণে তাঁর ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য দেয়া হয় এবং উন্নয়ন বাজেটে বাধ্যবাধকতার কারণে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ক্রয় করা হয়েছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “জনাব জাহিদ আলম উপাচার্যের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ একটি মাইক্রোবাস সার্বক্ষণিক ভাবে ব্যবহার করা শুরু করেন।” কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর ন্যায় তিনিও প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াত করেন। তাছাড়া ঈদের ছুটির সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষেই তিনি মাইক্রোবাসটি ব্যবহার করেছেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, প্রথম বর্ষ (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে ব্যয় করা হয়। ভর্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বন্ধের দিনসহ অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়। এরূপ অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে সম্মানি প্রদান করা হয়ে থাকে। অব্যয়িত সমস্ত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিলে স্থানান্তর করা হয়। যেখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ‘দৈনিক প্রথমআলো’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

প্রতিবাদলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও দাবী করে, দৈনিক প্রথম আলো’র মতো বহুল প্রচারিত একটি পত্রিকায় বিশেষ কুচক্রী ও স্বার্থান্বেষী মহলের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এধরনের ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ পরিবেশন তথাকথিত হলুদ সাংবাদিকতাকেই প্রশ্রয় দেয়ার সামিল। পত্রিকায় প্রকাশিত এ ধরণের অসত্য, বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ চলার পথকে কেবল বাধাগ্রস্থই করছে না, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সামাজিক মান-মর্যাদাও ক্ষুন্ন করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এধরণের অসত্য, বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ করছে।

প্রতিবাদলিপি এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্তের যথার্থতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আজ  অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় উক্ত প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সভার সদস্যরা।

এদিকে, প্রথম আলো পত্রিকায় “উপাচার্যের গাড়ি বিলাস, অর্থকান্ড” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটির উপর ভিত্তি করে আজ বেলা ১১ টায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ‌ক্যাম্পাসে এক বিক্ষোব মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।





No comments:

Post a Comment